, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ , ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


২৮ অক্টোবর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপিকে জামায়াতের চিঠি

  • আপলোড সময় : ২৩-১০-২০২৩ ০৮:২৩:৪৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-১০-২০২৩ ০৮:২৩:৪৫ অপরাহ্ন
২৮ অক্টোবর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপিকে জামায়াতের চিঠি
চলতি মাসের আগামী ২৮ অক্টোবর মতিঝিল শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে মহাসমাবেশ সফল করতে ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে জামায়াত। আজ সোমবার ২৩ অক্টোবর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
 
এদিকে সভায় দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় এবং আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকা মহানগরীর শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় মুজিবুর রহমান বলেন, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারা জামায়াতকে নেতৃত্ব শূন্য করার উদ্দেশ্যে সাজানো, ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে নেতাদের ফাঁসির দণ্ড দিয়ে তা কার্যকর করে।

বাংলাদেশ আজ রাজনৈতিক নেতৃত্বশূন্য। সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের কোনো নেতা যেন কথা বলতে না পারেন, সেজন্য নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে মামলা দিয়ে বিরোধীদলকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধীদলের নেতাকর্মীরা যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সেজন্য গভীর রাত পর্যন্ত সাক্ষ্য নিয়ে মিথ্যা মামলায় সাজানো দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
 
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রহসন করে পুনরায় ক্ষমতায় আসে। ২০১৪ সালে মূলত বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৫৪টি আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় দেশের অর্ধেক মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে এটি কোনো নির্বাচন ছিল না।

এদিকে মুজিবুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের রাতে ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে মধ্যরাতের পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালের নির্বাচন মধ্যরাতের নির্বাচন হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে। এই সরকার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের গভীর ষড়যন্ত্র করছে। ইতোমধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে সব রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, আইনজীবী ও পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার সেদিকে কোনো কর্ণপাত করছে না।

সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাহী পরিষদ লক্ষ্য করছে, গত ১৫ বছর ধরে বর্তমান সরকার দেশে হত্যা, নৈরাজ্য, গুম, খুন, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের মাধ্যমে দেশকে এক অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। বিশ্বে বাংলাদেশ একটি গুম-খুন, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী, ভোটাধিকারবিহীন, গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। আর মাত্র তিন মাস পরেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক দল হিসেবে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ সব রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কেয়ারটেকার সরকারের দাবি মেনে নিয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

কিন্তু সরকার তা অগ্রাহ্য করে অব্যাহতভাবে গণগ্রেফতার চালিয়ে আসছে। এ পরিস্থিতিতে গোটা জাতি আজ এক দফার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। এমতাবস্থায় সংসদ ভেঙে দিয়ে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের জনশক্তি ও দেশবাসীকে সুশৃঙ্খলভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য নির্বাহী পরিষদ আহ্বান জানাচ্ছে।
 
এদিকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ মনে করে, রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে রাজনৈতিক দলসমূহের সভা-সমাবেশ ও মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করা। মিছিল, মিটিং, সভা-সমাবেশ প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এ অধিকার যাতে তারা প্রয়োগ করতে পারে, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করা পুলিশের দায়িত্ব।

তাতে বাধা দেওয়া পুলিশের দায়িত্ব হতে পারে না। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি বিগত সময় ৫০ থেকে ৬০ বারেরও অধিক বার দেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করার সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। এটি সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক। এই ভূমিকা থেকে বিরত থাকার জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ আগামী ২৮ অক্টোবর শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে সুশৃঙ্খলভাবে সমবেত হয়ে এক দফা দাবি কেয়োরটেকার সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়নের আন্দোলনকে বেগবান করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং সরকারের কোনো ধরনের উসকানি, অসাংবিধানিক ও গণতন্ত্র বিরোধী অপতৎপরতায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য নির্বাহী পরিষদ দেশবাসী এবং সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

এদিকে মহাসমাবেশ সফল করতে ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে জামায়াত। ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকা মহানগরীর শাপলা চত্বরে জামায়াতে ইসলামীর শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ সফল করে তোলার জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের আহ্বান জানিয়েছে।
 
সর্বশেষ সংবাদ
হামাসকে ইসরাইলের ‘উদার’ প্রস্তাব মেনে নিতে বললেন ব্লিঙ্কেন

হামাসকে ইসরাইলের ‘উদার’ প্রস্তাব মেনে নিতে বললেন ব্লিঙ্কেন